রেসিপির গল্প এবং কেন এই রেসিপিটি বিশেষ?
ভাজা মশলার মোহময় ঘ্রাণে চিকেন ভুনা যেন বাঙালির খাবারের টেবিলে এক বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। বিশেষত এই রান্নাটি যদি শুকনো খোলায় মসলা ড্রাই রোস্ট করে শীলে বেটে করেন, তাহলে এই রান্নার যে স্বাদ পাওয়া যায়, তা একেবারে অতুলনীয় এবং মনের গভীরে চলে যায়। মসলাগুলোর পুরো ফ্লেভার বের হয়ে চিকেনের সাথে মিশে স্বাদের অভিজ্ঞতাকে পৌঁছে দেয় এক নতুন মাত্রায়।
এই রেসিপিতে জিরা, ধনিয়া, এলাচ, শুকনো মরিচ ভেজে তৈরি করা মশলায় চিকেন রান্নার স্বাদ হয় এক অনন্য গভীরতার। আদা-রসুনের মাখামাখি আর পেঁয়াজ বাটার সাথে ধীরে ধীরে কষানো এই ভুনা মাংস শুধু স্বাদে নয়, ঘ্রাণেও মন ছুঁয়ে যায়।
কেন এটি খেতে ভালো লাগবেঃ
১. ভাজা মশলার সঙ্গে চিকেনের মাখামাখি একটি অনবদ্য স্বাদ তৈরি করে।
২. পেঁয়াজ আর টমেটো বাটার সমৃদ্ধ গ্রেভি ভাত বা পরোটার সাথে অসাধারণ ভাবে মিলে যায়।
৩. মৃদু আঁচে কষানো চিকেন মাখনের মতো নরম হয়।
৪. কাঁচা মরিচ ও ভাজা রসুনের ঝাঁঝ স্বাদে যোগ করে বাড়তি মাত্রা।
যা যা লাগবে রান্নাটি করতেঃ
- মুরগির মাংস
- পেঁয়াজ, আদা, রসুন
- ভাজা মশলা (জিরা, ধনিয়া, গোল মরিচ, লবঙ্গ, শুকনো মরিচ, এলাচ ও দারুচিনি ভেজে গুঁড়ো করা)
- টমেটো কুচি
- লবণ স্বাদমতো
- সরিষার তেল
- কাঁচা মরিচ
- ধনিয়াপাতা সাজানোর জন্য
স্বাস্থ্য উপকারিতাঃ
- মুরগির মাংসে রয়েছে উচ্চ প্রোটিন যা শরীর গঠনে সহায়ক।
- ভাজা মশলায় থাকা ধনে ও জিরার অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ পেটের জন্য উপকারী।
- কাঁচা মরিচ ও ধনিয়া পাতায় রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট।
পরিবেশনঃ
এই ভাজা মশলা দিয়ে চিকেন ভুনা বাসমতী চালের ভাতের সাথে খেতে অনন্য। এছাড়া গরম ভাত বা পরোটার সাথেও পরিবেশন করা যায়। ধনিয়া পাতা ও কাঁচা মরিচ ছড়িয়ে নিলে পরিবেশনের সৌন্দর্য দ্বিগুণ হবে।
তাহলে আর দেরি কেন? চলুন শুরু করি পারফেক্ট স্বাদের ভাজা মশলা দিয়ে চিকেন ভুনা রান্না এবং পরিবারের সবার সাথে স্মৃতিময় এক অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে নেই।

ভাজা মসলা দিয়ে মুরগির ভুনা - সেরা স্বাদের ঘরোয়া রান্না
ভাজা মশলায় মুরগীর ভুনা এক বিশেষ রন্ধন পদ্ধতি, যা স্বাদ এবং ঘ্রাণে একটি অন্য মাত্রা যোগ করে। এই রেসিপিটি সহজ এবং বয়লার মুরগির জন্য আদর্শ। সেরা স্বাদের মুরগির ভুনা রান্নার জন্য এই রেসিপিটি একদম সহজ পদ্ধতিতে উপস্থাপন করা হল।
Prep Time 20 minutes mins
Cook Time 1 hour hr
Course Main Course
Cuisine Bengali
Servings 4
Ingredients
- ১ কাপ সরিষার তেল
- ৫-৬ কোয়া থেঁতো রসুন
- ৫-৬ টি কাঁচা মরিচ
- ২ কাপ পেঁয়াজ কুচি
- ১ টি টমেটো কুচি
- ২ টেবিল চামচ আদা- শুকনো মরিচ বাটা
- ১ চা চামচ লবণ (স্বাদ মতো)
- ১ চা চামচ কাশ্মিরী মরিচ গুঁড়া (অপশনাল)
- ১/৩ চা চামচ হলুদ গুঁড়া
- ৬৫০ গ্রাম চিকেন (আংশিক চামড়া সহ নেয়া যেতে পারে)
- ১ চা চামচ আস্ত জিরা
- ১ চা চামচ আস্ত ধনিয়া
- ১/২ চা চামচ গোল মরিচ
- ৪-৫ টি লবঙ্গ
- ২-৩ টি শুকনো মরিচ
- ৩ টি এলাচ
- ১.৫ ইঞ্চি দারুচিনি
Instructions
- মাংস প্রস্তুত করা: মাংসের টুকরোগুলো ভালোভাবে ধুয়ে লেবুর রস দিয়ে মেখে ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন। এই প্রসেসটি মাংসকে নরম ও সুস্বাদু করবে এবং মশলার সাথে মাংস দ্রুত মিশে যাবে। তবে হাতে সময় না থাকলেএই ধাপটি বাদ দেয়া যায়।
- তেলে মসলা ভাজা: একটি প্যানে সরিষার তেল গরম করুন। তেলে প্রথমে থেঁতো রসুন ও কাঁচা মরিচ দিন। মৃদু আঁচে ১-২ মিনিট নেড়ে নিন। এই পর্যায়ে রসুন ও মরিচের সুন্দর ঘ্রাণ বের হবে।
- পেঁয়াজ ও টমেটো যোগ করা: পেঁয়াজ কুচি যোগ করুন এবং হালকা বাদামি রং হওয়া পর্যন্ত ভাজতে থাকুন। পেঁয়াজ ভাজা হয়ে গেলে টমেটো কুচি, আদা-শুকনো মরিচ বাটা এবং লবণ দিন। মসলা ভালোভাবে কষিয়ে নিন যতক্ষণ না টমেটো পুরোপুরি গলে যায়।
- মাংস রান্না করা: কষানো মসলার মধ্যে মাংসের টুকরোগুলো দিন। ৫-৭ মিনিট ভালোভাবে নাড়ুন যাতে মাংসের উপরে মসলা খুব ভালো ভাবে মাখা হয়। এরপর কাশ্মিরী মরিচ গুঁড়া ও হলুদ যোগ করে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। মাংস কষাতে কষাতে প্রয়োজন মতো সামান্য পানি যোগ করুন।
- ভাজা মসলা তৈরি করা: একটি শুকনো প্যানে জিরা, ধনিয়া, গোল মরিচ, লবঙ্গ, শুকনো মরিচ, এলাচ এবং দারুচিনি হালকা ভেজে নিন। ভাজার সময় মশলার ঘ্রাণ বের হবে। ঠান্ডা হয়ে গেলে শিলে বেটে নিন অথবা ব্লেন্ডারে গুঁড়ো করে নিন।এইক্ষেত্রে সম্ভব হলে শিলে গুঁড়া করাই ভালো।
- ভাজা মসলা যোগ এবং শেষ ধাপ: মাংস প্রায় সেদ্ধ হয়ে এলে ভাজা মসলা ছড়িয়ে দিন এবং মাংসের সাথে মিশিয়ে নাড়ুন। আঁচ কমিয়ে আরও ২-৩ মিনিট রান্না করুন যাতে ভাজা মসলার স্বাদ পুরো মাংসে মিশে যায়। এবার চুলা বন্ধ করে কিছু সময়ের জন্য ঢেকে রাখুন।
Notes
অতিরিক্ত টিপসঃ
১. মাংস আরও নরম করার জন্য: যদি সময় থাকে লেবুর রসের সাথে একটু টক দই মিশিয়ে মাংসে মেখে ৩০ মিনিট রেখে দিন। এটি মাংসকে আরও রসালো করবে।
২. সরিষার বিকল্প: সরিষার তেলের ঘ্রাণ অনেকের পছন্দ না হলে সাদা তেল (সয়াবিন বা সূর্যমুখী তেল) ব্যবহার করতে পারেন। তবে সরিষার তেলে রান্না করলে ঐতিহ্যবাহী স্বাদটা পাওয়া যাবে।
৩. স্বাদের বাড়ানো: রান্নার শেষে ঘরে বানানো গাওয়া ঘি এক চামচ যোগ করলে ভুনার স্বাদ আর আরও এক ধাপ বৃদ্ধি পাবে। তবে ঘী খাঁটি না হলে এই ক্ষেত্রে ব্যবহারের একদম দরকার নেই।
৪.ভাজা মসলা সংরক্ষণ: বেশি পরিমাণে ভাজা মসলা একবার বানিয়ে এয়ারটাইট কন্টেইনারে সংরক্ষণ করতে পারেন। এটি ১-২ মাস ভালো থাকবে এবং যেকোনো ভুনা বা গ্রেভি রেসিপিতে ব্যবহার করা যাবে। ৫. মশলা বাটার বিকল্প: শিলে মসলা বাটার সময় না থাকলে মশলাগুলো ড্রাই রোস্ট করে মিক্সিতে বা ব্লেন্ডারে গুঁড়ো করে রাখুন। তবে শিলে বাটার মসলা ব্যবহারে আলাদা একটি স্বাদ ও ঘ্রাণ পাওয়া যায়। ৬. চিকেন চয়েস: এই রেসিপিটি বয়লার মুরগির জন্য আদর্শ তবে দেশি বা সোনালি মুরগি ব্যবহার করলে রান্নার সময় একটু বেশি দিতে হবে। দেশি মুরগি বেশি সময় ধরে রান্না করলে আরও ভালো স্বাদ পাওয়া যায়। দেশি মুরগীর ক্ষেত্রে মসলা কিছুটা কম ব্যবহার করা যায় এই রান্নায়। ৭. রান্নায় জলের পরিমাপ: গ্রেভি তৈরি করতে চাইলে পানি একটু বেশি দিন। শুকনো ভুনা চাইলে পানির পরিমাণ কমিয়ে রান্নার সময় বাড়িয়ে দিন। ৮. পোড়া মশলার সতর্কতা: শুকনো মসলা ভাজার সময় সাবধানে ভাজতে হবে কারণ বেশি ভাজলে মশলা পুড়ে গিয়ে তিক্ত স্বাদ হতে পারে। ৯. বাচ্চাদের জন্য: যদি বাচ্চাদের জন্য রান্না করেন তাহলে শুকনো মরিচ এবং গোল মরিচের পরিমাণ কমিয়ে দিন। পরিশেষে, ভাজা মসলা দিয়ে মুরগির ভুনা এমন একটি রান্না যা সহজ উপকরণে রান্না করা যায় এবং প্রতিদিনের খাবারকে উৎসবের মতো রূপ দেয়। এছাড়া এই রান্নাটি নিঃসন্দেহে চিকেনের বিশেষত বয়লার মুরগী দিয়া রান্না অন্যতম সেরা রেসিপি। ব্যস্ত দিনেও এই রেসিপি রান্না করা যায় কারণ এই রান্নায় খুব বেশি সময় লাগে না। গরম ভাতের সাথে বা বাসমতীর সাথে এই রান্নাটি খাওয়ার সময় পরিবারের হাসি-খুশি মুখ দেখেই বোঝা যাবে, আপনি কেমন দারুণ রান্না করেছেন। এই রেসিপিটি ট্রাই করে অবশ্যই জানাবেন কেমন হলো!

৪.ভাজা মসলা সংরক্ষণ: বেশি পরিমাণে ভাজা মসলা একবার বানিয়ে এয়ারটাইট কন্টেইনারে সংরক্ষণ করতে পারেন। এটি ১-২ মাস ভালো থাকবে এবং যেকোনো ভুনা বা গ্রেভি রেসিপিতে ব্যবহার করা যাবে। ৫. মশলা বাটার বিকল্প: শিলে মসলা বাটার সময় না থাকলে মশলাগুলো ড্রাই রোস্ট করে মিক্সিতে বা ব্লেন্ডারে গুঁড়ো করে রাখুন। তবে শিলে বাটার মসলা ব্যবহারে আলাদা একটি স্বাদ ও ঘ্রাণ পাওয়া যায়। ৬. চিকেন চয়েস: এই রেসিপিটি বয়লার মুরগির জন্য আদর্শ তবে দেশি বা সোনালি মুরগি ব্যবহার করলে রান্নার সময় একটু বেশি দিতে হবে। দেশি মুরগি বেশি সময় ধরে রান্না করলে আরও ভালো স্বাদ পাওয়া যায়। দেশি মুরগীর ক্ষেত্রে মসলা কিছুটা কম ব্যবহার করা যায় এই রান্নায়। ৭. রান্নায় জলের পরিমাপ: গ্রেভি তৈরি করতে চাইলে পানি একটু বেশি দিন। শুকনো ভুনা চাইলে পানির পরিমাণ কমিয়ে রান্নার সময় বাড়িয়ে দিন। ৮. পোড়া মশলার সতর্কতা: শুকনো মসলা ভাজার সময় সাবধানে ভাজতে হবে কারণ বেশি ভাজলে মশলা পুড়ে গিয়ে তিক্ত স্বাদ হতে পারে। ৯. বাচ্চাদের জন্য: যদি বাচ্চাদের জন্য রান্না করেন তাহলে শুকনো মরিচ এবং গোল মরিচের পরিমাণ কমিয়ে দিন। পরিশেষে, ভাজা মসলা দিয়ে মুরগির ভুনা এমন একটি রান্না যা সহজ উপকরণে রান্না করা যায় এবং প্রতিদিনের খাবারকে উৎসবের মতো রূপ দেয়। এছাড়া এই রান্নাটি নিঃসন্দেহে চিকেনের বিশেষত বয়লার মুরগী দিয়া রান্না অন্যতম সেরা রেসিপি। ব্যস্ত দিনেও এই রেসিপি রান্না করা যায় কারণ এই রান্নায় খুব বেশি সময় লাগে না। গরম ভাতের সাথে বা বাসমতীর সাথে এই রান্নাটি খাওয়ার সময় পরিবারের হাসি-খুশি মুখ দেখেই বোঝা যাবে, আপনি কেমন দারুণ রান্না করেছেন। এই রেসিপিটি ট্রাই করে অবশ্যই জানাবেন কেমন হলো!
Keyword Chicken Recipe, Chicken Kosha, Chicken Curry, Chicken with roasted masala, dry roast spices chicken