ধনিয়া পাতা দিয়ে কাতলা মাছের ফ্রাই

Green-Katla-Fish-Fry

রেসিপির গল্প এবং কেন এই রেসিপিটি বিশেষ?

ধনিয়া পাতা দিয়ে কাতলা মাছের ফ্রাই; আধুনিক বাঙালি রান্নার একটি নতুন সংযোজন। ধনিয়া পাতা ব্যবহার করে তৈরি এই ফ্রাই রেসিপিটি একটু আলাদা এবং অত্যন্ত মুখরোচক। সতেজ ধনিয়া পাতার গন্ধ, কাঁচা মরিচের ঝাল এবং লেবুর টকমিষ্টি স্বাদের সংমিশ্রণ এই মাছের স্বাদকে এক নতুন মাত্রা দেয়। এই রেসিপিটি শুধু একটি ভাজা মাছই নয় বরং ঘরোয়া খাবারের মেনুতে একটি বিশেষ অভিজ্ঞতা তৈরি করে। বিশেষ করে যারা বাড়িতে ভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করতে পছন্দ করেন, তাদের জন্য এটি একটি চমৎকার আইটেম।

কেন এটি খেতে ভালো লাগবেঃ

১. ধনিয়া পাতার সতেজ গন্ধ প্রতিটি কামড়ে অনুভূত হয়।
২. মচমচে ভাজা টেক্সচার মুখে এক অন্যরকম আনন্দ দেয়।
৩. সহজলভ্য ও ঘরে থাকা উপকরণ দিয়ে এটি তৈরি করা যায়।
৪. কাতলা মাছের সাথে ধনিয়া পাতার এই কম্বিনেশন একদম নতুন স্বাদের সংযোজন।
৫. শেষে কুচি করা পেঁয়াজ ও লেবুর রস যোগ করে খেলে এর স্বাদ আরও বেড়ে যায়।

যা যা লাগবে এই রান্না করতেঃ

১. কাতলা মাছ
২. ধনিয়া পাতা
৩. কাঁচা মরিচ
৪. রসুন
৫. ভাজা জিরার গুঁড়ো
৬. লবণ
৭. লেবু
৮. চালের গুঁড়া ও
৯. সরিষার তেল

স্বাস্থ্য উপকারিতাঃ

- কাতলা মাছ উচ্চ মানের প্রোটিন সরবরাহ করে, যা শরীরের পেশি গঠনে সহায়তা করে এবং দৈনন্দিন শক্তির চাহিদা পূরণ করে।

- কাতলা মাছে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়ক এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

- সরিষার তেলে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে, যা ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।

- লেবুর রসে থাকা ভিটামিন সি এবং পেঁয়াজের প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে।

- তুলনামূলক কম তেলে ভাজা হওয়ায় এই খাবারটি ভাজা খাবারের একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্প, যা স্বাদ এবং পুষ্টির ভারসাম্য বজায় রাখে।

- ধনিয়া পাতায় থাকা উপাদানগুলি শরীরের ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে এবং যকৃতে জমে থাকা বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়।

পরিবেশনঃ

গরম গরম ধনিয়া পাতা দিয়ে কাতলা মাছের ফ্রাই পরিবেশন করুন। সাথে কাসুন্দি যোগ করতে পারেন। ভাত বা পোলাও এর সাথেও খেতে দারুণ লাগবে। উপরে কুচি করা পেঁয়াজ ও লেবুর রস ছড়িয়ে দিয়ে পরিবেশন করলে এর স্বাদ আরও বাড়বে।

Green-Katla-Fish-Fry

ধনিয়া পাতা দিয়ে কাতলা মাছের ফ্রাই

ধনিয়াপাতা দিয়ে কাতলা মাছ ভাজার এই রেসিপিটি বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী স্বাদের সাথে একটু ভিন্নধর্মী সবুজ পেস্টের স্বাদের মিশেলে তৈরি করা। ধনিয়াপাতা, কাঁচা মরিচ, রসুন এবং আদার গন্ধে মাছের এক ভিন্ন স্বাদ এই রান্নায় পাওয়া যায়। এছাড়া, এই রেসিপিটি কাতলা মাছের সহজ এবং সুস্বাদু একটি রান্না, যা অল্প সময়ে এবং ঘরোয়া উপকরণে তৈরি করা যায়।
Prep Time 30 minutes
Cook Time 15 minutes
Course Appetizer, Side Dish
Cuisine Bengali
Servings 2

Ingredients
  

  • পিস কাতলা মাছ
  • ১/২ কাপ ধনিয়া পাতা
  • ৫-৬ টি কাঁচা মরিচ
  • ৩-৪ কোয়া রসুন
  • ১/২ চা চামচ ভাজা জিরার গুঁড়ো
  • ১/৩ চা চামচ লবন (স্বাদমতো)
  • টেবিল চামচ লেবুর রস (১ টুকরো লেবু)
  • টেবিল চামচ চালের গুঁড়ো

Instructions
 

  • প্রথমে কাতলা মাছের টুকরাগুলোকে পরিষ্কার করে নিন এবং একদম ঝরঝরে করে নিন। মাছ ধোয়ার পর ভালোভাবে পানি ঝরিয়ে নিলে ভালো হয়। কারণ এতে মাছ ভাজার সময় তেল ছিটবে না এবং মাছও সুন্দরভাবে মচমচে হবে।
  • এরপর ধনিয়াপাতা, কাঁচা মরিচ, আদা এবং রসুন এবং একসাথে ব্লেন্ড করে মসৃণ একটি পেস্ট তৈরি করে নিন। এই পেস্টটি মূলত মাছের মশলা হিসেবে ব্যবহৃত হবে এবং এই পেস্ট মাছ ভাজাকে বিশেষ রঙ এবং ফ্লেভার এনে দেয়।
  • এবার সবুজ পেস্টের সাথে প্রয়োজনীয় উপকরণ মিশিয়ে মাছ মেরিনেট করার প্রক্রিয়া শুরু করুন। প্রথমে পেস্টের সাথে পরিমাণমতো লবণ মিশিয়ে নিন। লবণ মাছের টুকরাগুলোতে স্বাদ আনবে এবং মশলাগুলোকে আরও ভালোভাবে মিশতে সাহায্য করবে। এরপর এর মধ্যে ভাজা জিরার গুঁড়ো যোগ করুন। ভাজা জিরার গুঁড়ো মাছের ঘ্রাণ এবং স্বাদে এক অনন্য মাত্রা যোগ করবে, যা খাবারকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে।
  • এখন এতে একটি মাঝারি আকারের লেবুর রস দিন। লেবুর রস মাছকে শুধু টক স্বাদই দেবে না, বরং মাছকে আরও নরম ও রসালো করবে। তারপর চালের গুঁড়ো মেশান। চালের গুঁড়ো মাছের গায়ে মসলা আটকে রাখতে সাহায্য করবে এবং ভাজার সময় বাইরের অংশটা সুন্দরভাবে মচমচে হবে।
  • সব উপকরণ মিশিয়ে নেয়ার পর, খেয়াল করে দেখুন যে প্রতিটি মাছের টুকরা মশলার পেস্টে সমানভাবে ঢেকে গেছে। এবার কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪৫ মিনিটের জন্য ম্যারিনেট করে রাখুন।
    এই ম্যারিনেট করার সময়টুকু খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এর কারনে লেবুর রস এবং ভাজা জিরার গুঁড়ো মিশ্রিত হওয়ার কারণে মাছের ঘ্রাণ ও স্বাদ আরও তীব্র এবং মজাদার হয়।
  • ম্যারিনেট হয়ে গেলে একটি ফ্রাইপ্যানে তেল গরম করে নিন। তেল ভালোভাবে গরম হলে ম্যারিনেট করা মাছের টুকরাগুলো দিয়ে মাঝারি আঁচে ধীরে ধীরে ভাজতে থাকুন। মাছের দুই পিঠ সুন্দর করে সোনালি-সবুজ রঙের এবং মচমচে হওয়া পর্যন্ত হওয়া পর্যন্ত ভাজতে থাকুন।
    মাছ ভাজার সময় বেশি নাড়া চাড়ার দরকার নেই, এতে মাছ ভেঙে যেতে পারে।
  • ভাজা শেষ হলে মাছের টুকরাগুলো একটি পাত্রে তুলে নিন। গরম গরম এই সবুজ কাতলা মাছ ভাজা পরিবেশন করুন কাঁচা পেঁয়াজ এবং লেবুর রসের সাথে। এতে করে মাছটি দেখতে যেমন আকর্ষণীয় হবে, তেমনি স্বাদেও হবে একদম মনোমুগ্ধকর।
    চাইলে সামান্য কাঁচা মরিচ বা ধনিয়াপাতা দিয়ে গার্নিশ করতে পারেন। যা দেখতে যেমন চমৎকার লাগবে, তেমনি বাড়তি সুগন্ধও যোগ করবে।

Notes

অতিরিক্ত টিপসঃ 
- মাছ ম্যারিনেট করার সময় চাইলে একটু বেশি সময় রেখে দেয়া যায়। এতে মশলার স্বাদ আরও ভালোভাবে মিশে যায় মাছে।
২। মাছ ভাজার জন্য সরিষার তেল ব্যবহার করলে স্বাদ এবং গন্ধ অনেকটাই বৃদ্ধি পায়। সরিষার তেলের হালকা ঝাঁঝ এবং ঘ্রাণ এই রেসিপিতে ভিন্ন এক মাত্রা যোগ করে। 
৩। মাছ মচমচে করতে চালের গুঁড়ার ব্যবহার করা হয়েছে, কারণ চালের গুঁড়া ভাজা খাবারের ওপর একটি খাস্তা আবরণ তৈরি করে। তবে চালের গুঁড়া না থাকলে কর্নফ্লাওয়ার বা ময়দার সাথে সামান্য ভুট্টার গুঁড়া মিশিয়ে বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এই বিকল্পগুলোও একইভাবে মচমচে প্রভাব দেবে।
৪। সবুজ কাতলা মাছ ভাজা পেঁয়াজ কুচি এবং লেবুর রসের সাথে যেমন পরিবেশন করা যায়, তেমন সাদা ভাত, ফ্রাইড রাইস বা পোলাওয়ের সাথেও পরিবেশন করা যায়। পোলাওয়ের হালকা মিষ্টি স্বাদ এবং এই মাছ ভাজার ঝাঁঝালো ও মশলাদার স্বাদ একে অপরের পরিপূরক।
৫। এই রেসিপিতে ধনিয়াপাতার সতেজ ঘ্রাণ এবং মশলার সুষম ব্যবহার যে কারোর মন জয় করবে। পরিবেশনের আগে সামান্য ধনিয়াপাতা কুচি ছিটিয়ে দিলে মাছ ফ্রাই আরও আকর্ষণীয় দেখাবে এবং স্বাদেও বাড়তি তৃপ্তি যোগ করবে। 
৬। অতিরিক্ত ঝাল পছন্দ করলে মাছ ভাজার মসলা মেশানোর সময় কিছু কাঁচা মরিচ কুচি যোগ করা যেতে পারে। এতে ঝাঁঝালো স্বাদ পাওয়া যাবে যা ঝালপ্রেমীদের জন্য একদম উপযুক্ত।
৭। অতিথিদের সামনে পরিবেশনের সময় সাথে কাসুন্দি দিয়েও পরিবেশন করতে পারেন।
পরিশেষে, এই সবুজ কাতলা মাছ ভাজার রেসিপিটি কেবল একটি খাবার নয়, বরং ভিন্ন ধর্মী স্বাদের এক অভিজ্ঞতা। সরিষার তেলের ঝাঁঝালো ঘ্রাণ, মশলার নিখুঁত মিশ্রণ এবং মচমচে আবরণ এই মাছ ভাজাকে বিশেষ করে তোলে।
যারা নতুন নতুন স্বাদের সন্ধান করেন, তাদের জন্য একেবারে আদর্শ একটি খাবার এই ধনিয়া পাতার কাতলা ফ্রাই। শুধুমাত্র ভোজনরসিকদের জন্য নয় বরং সেইসব ফুড এক্সপ্লোরারদের জন্যও এই রান্না পারফেক্ট যারা প্রতিটি খাবারে নতুনত্ব আশা করেন।
পেঁয়াজ, লেবুর রস কিংবা কাসুন্দির সাথে যেমন আকর্ষণীয়ভাবে এই খাবার পরিবেশন করা যায় তেমন সাদা ভাত, পোলাও এর সাথেও এটি দারুণ মানিয়ে যায়।
যদি আপনি ভিন্ন ধরণের খাবার পছন্দ করেন এবং রেসিপি নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে ভালোবাসেন, তবে এই রেসিপিটি অবশ্যই আপনার রান্নার তালিকায় যোগ করুন। রান্না শেষে প্রতিটি কামড়ে আপনাকে নিয়ে যাবে এক নতুন স্বাদের জগতে। ভোজনরসিকদের জন্য এটি নিঃসন্দেহে একটি মাস্ট-ট্রাই ডিশ!
Keyword Unique Bengali flavors, Bengali Fish Recipe, Fish Recipe, Katla Fish, Fry Recipe

Did You Make This?

Tag @delicioushomemaking on Instagram and hashtag it #delicioushomemaking so we can see all the deliciousness!

Share on FB
Whatsapp this
Telegram this
Search

Share this:

Trending Categories

want more deliciousness?

Get our copy of FAN FAVORITES featuring 20 of our most loved, highly-rated recipes!

🔥 Burning Hot Recipes 🔥

Advertisements

Wanna Advertise Here?

For any kind of business inquiry, please contact us. We will get back to you shortly. Thanks!

Love our recipes?
Take them out with you!

Download the Delicious Home Making mobile app and enjoy: Hundreds of recipes at your fingertips and get inspired anytime, anywhere!

( Coming Soon )