সরিষার পুরে ভরা কাকরোল ভাজা - টেবিলে ভিন্ন স্বাদের ছোঁয়া
মুচমুচে ও স্বাদে ভরপুর সরিষার পুর ভরা কাকরোল ভাজা। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী এই রেসিপিটি কাকরোলের ভেতরে সরিষা বাটার ঝাঁঝালো পুর দিয়ে ব্যাটারে ডুবিয়ে সোনালি রঙে ভেজে তৈরি করা হয়। সহজ উপকরণে অল্প সময়েই এটি তৈরি করা যায়।
Prep Time 25 minutes mins
Cook Time 15 minutes mins
Course Side Dish
Cuisine Bengali
- ৫ টি কাকরোল
- ১-৩ টেবিল চামচ কালো সরিষা (স্বাদ মতো)
- ৫-৬ টি কাঁচা মরিচ
- ১/২ চা চামচ হলুদ গুঁড়া
- ১/২ চা চামচ মরিচ গুঁড়া
- ১ চা চামচ লবন (স্বাদমতো)
- ১/২ কাপ বেসন
- ২ টেবিল চামচ আতপ চালের গুঁড়া
কাকরোল প্রস্তুত করা: প্রথমে কাকরোল ভালো ভাবে ধুয়ে নিন। কাঁটা ছুরি বা ছুলুনি ব্যবহার করে কাকরোলের বাইরের শক্ত আবরণটি (কাঁটা) ঘষে ছাড়িয়ে নিন। কাকরোল মাঝ বরাবর কেটে বীজ বা বিচি বের করে ফেলুন।কেটে নেওয়া কাকরোল আবার ভালোভাবে ধুয়ে নিন এবং একটি ছাঁকনিতে বা পাত্রে রেখে জল ঝরাতে দিন। পুর তৈরি করা: কালো সরিষা, কাঁচা মরিচ, হলুদ গুঁড়া এবং লবণ একসঙ্গে মিশিয়ে শীল-পাটায় বাটুন। চাইলে ব্লেন্ডার ব্যবহার করতে পারেন। তবে শীল-পাটার বাটায় খাঁটি স্বাদ বেশি পাওয়া যায়। সরিষা বাটার মিশ্রণটি একটি পাত্রে তুলে রাখুন। এটিই হবে কাকরোলের ভেতরের পুর।
ব্যাটার তৈরি করা: একটি পাত্রে বেসন, আতপ চালের গুঁড়া, হলুদ গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া এবং লবণ একসাথে মিশিয়ে নিন। এর মধ্যে অল্প অল্প করে জল যোগ করুন এবং একটি মসৃণ ব্যাটার তৈরি করুন। ব্যাটার যেন বেশি পাতলা বা বেশি ঘন না হয়। এটি কাকরোলের গায়ে ভালোভাবে লেগে থাকতে হবে। ব্যাটারটি ঢেকে রেখে কিছুক্ষণ রেস্ট রাখলে ভালো হয়।
কাকরোলে পুর ভরা: প্রতিটি কাটা কাকরোলের ভেতরে চামচের সাহায্যে সরিষার পুর দিয়ে ভরে নিন। খেয়াল রাখতে হবে যেন ভেতরের অংশ ভালোভাবে সরিষার মিশ্রনে ভর্তি হয়। এটি মূলত কাকরোলের স্বাদকে বাড়িয়ে তুলে।
কাকরোল ভাজা: একটি কড়াইতে তেল ভালো ভাবে গরম করে নিতে হবে। তেল ভালোভাবে গরম না হলে কাকরোল ভাজার সময় তেল শুষে নিতে পারে। গরম তেলে কাকরোল দেওয়ার আগে প্রতিটি কাকরোল ব্যাটারে ভালোভাবে ডুবিয়ে নিন।কাকরোল গুলো গরম তেলে দিন এবং মিডিয়াম আঁচে ভাজুন। প্রতিটি দিক ৩-৪ মিনিট করে ভাজুন যতক্ষণ না সোনালি রঙ ধারণ করে। ভাজা হয়ে গেলে টিস্যু পেপারের উপর তুলে রাখুন যাতে অতিরিক্ত তেল ঝরে যায়।
অতিরিক্ত টিপসঃ
১. তেল গরম করার আগে ব্যাটারের একটি অংশ দিয়ে পরীক্ষা করে নেয়া ভালো। যদি এটি তেলে ছেড়ে দিতেই চারদিকে বুদবুদ সহ ফুলে ওঠে, তবে তাপমাত্রা ঠিক আছে।
এছাড়া, বেশি গরম তেলে কাকরোলের বাইরেটা পুড়ে যেতে পারে এবং ভেতরটা কাঁচা থেকে যেতে পারে।
২. সরিষা ব্যবহার করার সময় খেয়াল রাখুন সরিষা দানা যেন নতুন ও ভালো মানের হয়। পুরের স্বাদ অধিকাংশেই সরিষার ওপর নির্ভর করে।
৩. ব্যাটার খুব পাতলা হলে কাকরোলের গায়ে লেপা থাকবে না। আবার খুব ঘন হলে তেলে পড়ার পর ভালোভাবে ভাজা হবে না।
৪. যদি কালো সরিষা বা সরিষার ঝাঁজ পছন্দ না করেন তবে নারকেল ও পোস্ত দিয়ে পুর তৈরি করে ট্রাই করতে পারেন। আর হ্যাঁ, ভিন্ন স্বাদ কেমন হয় অবশ্যই জানাবেন!
৫. পুর ভরা কাকরোল ফ্রাই সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে গরম ভাতের সাথে। তবে ভর্তা বা ডাল দিয়ে খেতেও বেশ মজাদার।
সংরক্ষণ:
- কাকরোল ভাজা গরম অবস্থায় খাওয়া সবচেয়ে ভালো।
- যদি বেঁচে যায় তবে এটি এয়ারটাইট পাত্রে রেখে ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে পারেন। পুনরায় গরম করার সময় তাওয়ায় বা ওভেনে গরম করুন।
পরিশেষে, সরিষার পুরে ভরা কাকরোল ভাজা শুধু খাবার নয়—এ যেন এক স্বাদের গল্প। সরিষার ঝাঁজ আর কাকরোলের মচমচে বাইরের প্রতিটি কামড়ে আপনি পাবেন ভিন্ন এক আনন্দের অনুভূতি। বিশেষ করে গরম ভাত লুচির সঙ্গে পরিবেশন করলে সাধারণ এই ভাজা হয়ে উঠতে পারে পরিবারের প্রিয় সাইড ডিশ।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই ভাজাটি শুধু পেট নয়, ব্যতিক্রমি খাবার খাওয়ার ইচ্ছাকেও তৃপ্ত করে। আর চুলা থেকে নামাতে নামেতে ,গরম ধোঁয়া উঠা ভাজা হাত দিয়ে নিয়ে খাওয়ার মজাটাই আলাদা!
তাহলে আর অপেক্ষা কেন? আজই রান্না করে দেখুন আর ভ করুন এই চমকপ্রদ খাবারটি।
ঝাঁজে নাক- চোখ দিয়ে জল এসেছিলো কিনা জানাতে ভুলবেন না!
Keyword Vegan Recipe, Vegetarian Recipe, Bangladeshi local recipe, Vegitable Fry, Kakrol