রেসিপির গল্প এবং কেন এই রেসিপিটি বিশেষ?
বাঙালির রান্নাঘরে নিরামিষ খাবারের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে, বিশেষ করে নির্দিষ্ট সিজনে, বিশেষ দিন কিংবা পুজোর সময়। কিন্তু নিরামিষ রান্নায় বৈচিত্র্য আনতে গেলে অনেকেই ভাবেন যে, নিরামিষ খাবার ততটা মজাদার হয় না। তবে এই ধারণা একেবারেই বদলে দেবে বাধাকপির নিরামিষ রুই - একটি অভিনব রেসিপি, যা স্বাদে, গন্ধে এবং চেহারায় অনেকটাই রুই মাছের মতো, অথচ এতে কোনো মাছের ছোঁয়া নেই!
এটি এমন এক নিরামিষ রান্না, যা শুধুমাত্র নিরামিষভোজীদের জন্য নয় বরং মাছপ্রেমীদের কাছেও নতুন অভিজ্ঞতা হয়ে উঠতে পারে।
এই রান্নার বিশেষত্ব হলো, পাতাকপিকে এমনভাবে কাটা, সেদ্ধ ও ভাজা হয় যে দেখতে অনেকটা মাছের মতো লাগে। এরপর ঘন মশলাদার ঝোলে যখন এটি রান্না হয়, তখন স্বাদেও পাওয়া যায় এক অনন্য মাত্রা। বিশেষ করে ময়দা ও চালের গুঁড়া দিয়ে তৈরি ব্যাটারে ডুবিয়ে ভেজে নেওয়া পাতাকপি যখন মশলাদার ঝোলে সেদ্ধ হয়, তখন প্রতিটি স্তরে মশলার স্বাদ মিশে যায়। এতে থাকে আদা, জিরা, গরম মসলা, তেজপাতা, আর শেষে সামান্য ঘি—যা পুরো রান্নাটিকে এক স্বর্গীয় ঘ্রাণে ভরিয়ে দেয়।
এই রেসিপিটি পুষ্টিগুণেও সমৃদ্ধ। বাধাকপিতে রয়েছে প্রচুর ফাইবার, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, এবং ভিটামিন সি, যা হজমের জন্য ভালো এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক। অন্যদিকে, তেলে ভাজার ফলে এর টেক্সচার হয় বেশ মচমচে, যা খাওয়ার সময় একদম নতুন এক অভিজ্ঞতা দেয়।
যারা নিরামিষ রান্নায় ভিন্নতা খোঁজেন বা যাদের নিরামিষ দিনে মাছ খাওয়ার ইচ্ছে জাগে, তাদের জন্য এটি একদম পারফেক্ট রেসিপি। গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন, উপরে সামান্য ঘি ছড়িয়ে দিন, আর উপভোগ করুন বাঙালিয়ানার এক অনন্য স্বাদ!
কেন রেসিপিটি বিশেষ?
বাধাকপির নিরামিষ রুই - একটি ব্যতিক্রমী আঞ্চলিক রান্না, যেখানে পাতাকপি রুই মাছের আকারে কেটে ও ভেজে রান্না করা হয়। এই নিরামিষ পদটি দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি স্বাদেও অনন্য। বাঙালি খাবারের ঐতিহ্যকে ধরে রেখে, এটি বিশেষ করে যারা নিরামিষভোজী বা নতুন কিছু ট্রাই করতে চান, তাদের জন্য দারুণ উপযুক্ত।
কেন এটি খেতে ভালো লাগবে?
১. পাতাকপির বিশেষ কাটা ও ভাজার ফলে এটি দেখতে রুই মাছের টুকরোর মতো হয়, যা চমৎকার এক ভিজ্যুয়াল প্লেটিং তৈরি করে।
২. ব্যাটারে চুবিয়ে ভাজার ফলে বাইরের দিকটা ক্রিস্পি আর ভেতরে নরম ও রসালো হয়।
৩. মশলা ও ঘিয়ে রান্নার ফলে এর স্বাদ গভীর এবং সমৃদ্ধ হয়।
৪. ঝোলের সাথে নরম আলু ও কাঁচা মরিচ যুক্ত হলে এটি খেতে আরও সুস্বাদু ও পারফেক্ট কম্বো হয়ে যায়।
যা যা লাগবে রান্নাটি করতেঃ
- ১টি মাঝারি বাধাকপি
- ময়দা, চালের গুঁড়া
- লবণ, হলুদ গুঁড়া
- তেল (ভাজার জন্য)
- আদা বাটা, জিরা বাটা
- তেজপাতা, জিরা
- আলু
- কাঁচা মরিচ
- চিনি, গরম মসলা ও
- ঘি
স্বাস্থ্য উপকারিতাঃ
বাধাকপিতে প্রচুর ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে, যা হজমের জন্য ভালো।
গরম মসলা ও ঘি খাবারের স্বাদ ও পুষ্টিগুণ বাড়ায়।
নিরামিষ হলেও এটি প্রোটিনসমৃদ্ধ ব্যালান্সড মিল হিসেবে কাজ করে।
পরিবেশন:
এই সুস্বাদু নিরামিষ রুই গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন। চাইলে উপরে সামান্য ধনিয়া পাতা ছড়িয়ে পরিবেশনের সৌন্দর্য আরও বাড়ানো যায়।
তাহলে দেরি না করে চলো, আঞ্চলিক স্বাদে মজে যাই বাধাকপির নিরামিষ রুই রান্না করে!

বাধাকপির নিরামিষ রুই - একটি ব্যতিক্রমী আঞ্চলিক রান্না
বাধাকপির নিরামিষ রুই একটি অভিনব নিরামিষ রেসিপি, যেখানে পাতাকপিকে রুই মাছের মতো কেটে, ব্যাটারে ডুবিয়ে ভেজে, সুগন্ধি মশলার ঝোলে রান্না করা হয়। এটি দেখতে রুই মাছের মতো হলেও পুরোপুরি নিরামিষ, আর স্বাদে অসাধারণ।
Prep Time 15 minutes mins
Cook Time 40 minutes mins
Course Main Course
Cuisine Bengali
Servings 5
Ingredients
- (প্রধান উপকরণ) ১ টি বাধাকপি
- ২ টি মাঝারি আলু
- ৫-৬ টি কাঁচা মরিচ
- ১ টেবিল চামচ ঘি
- (ব্যাটারের জন্য) ১/২ কাপ ময়দা
- ১/৪ কাপ চালের গুঁড়া
- ১/২ চা চামচ হলুদ গুঁড়া
- ১ টেবিল চামচ লবণ
- (ঝোলের জন্য) ১/২ কাপ সয়াবিন তেল
- ২ টি তেজপাতা
- ১/২ চা চামচ জিরা
- ১ চা চামচ আদা বাটা
- ১/২ চা চামচ জিরা বাটা
- ১/২ চা চামচ হলুদ গুঁড়া
- ১ চা চামচ মরিচের গুঁড়া
- ১ চা চামচ চিনি
- ১/২ চা চামচ গরম মসলা
Instructions
- বাধাকপি প্রস্তুতি: বাধাকপিকে মাঝারি বড় টুকরো করুন। রান্নার পর এই টুকরো গুলো মাছের টুকরোর মতো দেখায় বলে একে রুই মাছের নিরামিষ তরকারি বলা হয়।কাটার পর টুকড়ো গুলো কাঠি দিয়ে গেঁথে দিতে হবে, যেন বাঁধাকপির অংশ গুলো খুলে না যায়। এবার কাঠিতে গাথার পর ধুয়ে এক চিমটি লবণ ও হলুদ দিয়ে সেদ্ধ করুন (অর্ধেক সিদ্ধ হওয়া পর্যন্ত)।সিদ্ধ হয়ে গেলে নামিয়ে পানি ঝরতে দিন এবং ঠান্ডা হতে দিন।
- ব্যাটার তৈরি ও বাধাকপি ভাজা: একটি পাত্রে ময়দা, চালের গুঁড়া, হলুদ, লবণ ও জল মিশিয়ে পাতলা ব্যাটার তৈরি করুন। সিদ্ধ বাধাকপি টুকরো ব্যাটারে চুবিয়ে ডুবো তেলে সোনালি রঙের হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। ভাজা বাধাকপি তুলে অতিরিক্ত তেল ঝরিয়ে রাখুন।
- ঝোল তৈরি: করাইতে আর কিছুটা তেল যোগ করে (তেল দরকার না হলে লাগবে না) তেজপাতা ও জিরা ফোড়ন দিন। এবার এতে কেটে রাখা আলু দিয়ে কয়েক মিনিট ভাজুন। আলু কিছুটা ভাজা ভাজা হলে আদা বাটা, জিরা বাটা, হলুদ, লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষান।এবার ২ কাপ জল দিয়ে ঢেকে রাখুন, যাতে আলু নরম হয়। পরে ভাজা বাধাকপি দিয়ে ৩-৪ মিনিট রান্না করুন। শেষে কাঁচা মরিচ, চিনি, গরম মসলা ও ঘি দিয়ে নামিয়ে নিন।
Notes
অতিরিক্ত টিপসঃ
- পাতাকপি বেশি সিদ্ধ করলে টুকরোগুলো ভেঙে যেতে পারে, তাই অর্ধেক সিদ্ধ করাই ভালো।
- ব্যাটারে সামান্য কাঁচা মরিচের পেস্ট যোগ করলে স্বাদ আরও ভালো হবে।
- চাইলে ঝোলে নারকেল দুধ বা টমেটো পেস্ট ব্যবহার করা যায়, স্বাদে ভি
ন্নতা আসবে।
পরিশেষে,
বাধাকপির নিরামিষ রুই শুধুমাত্র একটি খাবার নয়, এই রান্নাটি বাঙালি রান্নার সৃজনশীলতার এক অনন্য উদাহরণ। মাছ ছাড়াই কীভাবে নিরামিষ খাবারকে মাছের মতো আকৃতি ও স্বাদ দেওয়া যায়, তার নিখুঁত নমুনা এই রেসিপি। বিশেষ করে নিরামিষাশীদের জন্য এটি একটি চমৎকার বিকল্প, যা প্রচলিত নিরামিষ রান্নার বাইরে গিয়ে নতুন স্বাদের অভিজ্ঞতা দেয়। বাধাকপির স্বাভাবিক মিষ্টত্ব, ব্যাটারের ক্রিস্পি টেক্সচার ও সুগন্ধি মশলার সংমিশ্রণ এই পদকে আরও লোভনীয় করে তোলে। ঝোলের মশলা বাধাকপির প্রতিটি স্তরকে শোষণ করে নেয়, ফলে প্রতিটি কামড়েই পাওয়া যায় গাঢ় স্বাদের অনুভূতি। এটি সহজ উপকরণ দিয়ে তৈরি হলেও স্বাদে সমৃদ্ধ এবং বিশেষ করে যারা নিরামিষ খাবারে বৈচিত্র্য চান, তাদের জন্য দারুণ একটি সংযোজন হতে পারে। এই রান্নাটি বিশেষ করে বিশেষ দিন, বাধাকপির সিজনের সময় অথবা টানা কিছু দিন রিচ ফুড খাবার পর সাধারণ খাবার হিসাবে বেশ ভালো লাগবে। এছাড়া পুজোর সময় বা উপবাসের দিনগুলোতেও পরিবেশনের জন্য আদর্শ। পাশাপাশি, এটি স্বাস্থ্যকরও বটে, কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও ভিটামিন রয়েছে, যা হজমের জন্য উপকারী। যারা নতুন ধরণের নিরামিষ রান্না খুঁজছেন, তাদের জন্য বাধাকপির নিরামিষ রুই নিঃসন্দেহে দারুণ এক সংযোজন হবে। এছাড়া ভিন্ন ধরণের খাবার স্বাদ নিতে যাদের সব সময়ই ভালো লাগে, তাদের জন্য ভোজনরসিক হিসাবে এই খাবার অবশ্যই ট্রাই করার মতো। গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন, উপরে সামান্য ঘি ছড়িয়ে দিন, আর উপভোগ করুন একেবারে ঘরোয়া স্বাদের নিরামিষ একটি অসাধারণ খাবার! আর রান্নার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে ভুলবেন না।
- ব্যাটারে সামান্য কাঁচা মরিচের পেস্ট যোগ করলে স্বাদ আরও ভালো হবে।
- চাইলে ঝোলে নারকেল দুধ বা টমেটো পেস্ট ব্যবহার করা যায়, স্বাদে ভি

বাধাকপির নিরামিষ রুই শুধুমাত্র একটি খাবার নয়, এই রান্নাটি বাঙালি রান্নার সৃজনশীলতার এক অনন্য উদাহরণ। মাছ ছাড়াই কীভাবে নিরামিষ খাবারকে মাছের মতো আকৃতি ও স্বাদ দেওয়া যায়, তার নিখুঁত নমুনা এই রেসিপি। বিশেষ করে নিরামিষাশীদের জন্য এটি একটি চমৎকার বিকল্প, যা প্রচলিত নিরামিষ রান্নার বাইরে গিয়ে নতুন স্বাদের অভিজ্ঞতা দেয়। বাধাকপির স্বাভাবিক মিষ্টত্ব, ব্যাটারের ক্রিস্পি টেক্সচার ও সুগন্ধি মশলার সংমিশ্রণ এই পদকে আরও লোভনীয় করে তোলে। ঝোলের মশলা বাধাকপির প্রতিটি স্তরকে শোষণ করে নেয়, ফলে প্রতিটি কামড়েই পাওয়া যায় গাঢ় স্বাদের অনুভূতি। এটি সহজ উপকরণ দিয়ে তৈরি হলেও স্বাদে সমৃদ্ধ এবং বিশেষ করে যারা নিরামিষ খাবারে বৈচিত্র্য চান, তাদের জন্য দারুণ একটি সংযোজন হতে পারে। এই রান্নাটি বিশেষ করে বিশেষ দিন, বাধাকপির সিজনের সময় অথবা টানা কিছু দিন রিচ ফুড খাবার পর সাধারণ খাবার হিসাবে বেশ ভালো লাগবে। এছাড়া পুজোর সময় বা উপবাসের দিনগুলোতেও পরিবেশনের জন্য আদর্শ। পাশাপাশি, এটি স্বাস্থ্যকরও বটে, কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও ভিটামিন রয়েছে, যা হজমের জন্য উপকারী। যারা নতুন ধরণের নিরামিষ রান্না খুঁজছেন, তাদের জন্য বাধাকপির নিরামিষ রুই নিঃসন্দেহে দারুণ এক সংযোজন হবে। এছাড়া ভিন্ন ধরণের খাবার স্বাদ নিতে যাদের সব সময়ই ভালো লাগে, তাদের জন্য ভোজনরসিক হিসাবে এই খাবার অবশ্যই ট্রাই করার মতো। গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন, উপরে সামান্য ঘি ছড়িয়ে দিন, আর উপভোগ করুন একেবারে ঘরোয়া স্বাদের নিরামিষ একটি অসাধারণ খাবার! আর রান্নার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে ভুলবেন না।
Keyword Vegan Recipe, Vegetarian Recipe, Bengali cuisine, Bangladeshi local recipe, village cooking, Cabbage Curry, নিরামিষ রান্না, পাতাকপি রান্না, পাতাকপির নিরামিষ রান্না, বাধাকপি রান্না, বাঁধাকপির নিরামিষ রান্না