রেসিপির গল্প এবং কেন এই রেসিপিটি বিশেষ?
কচুর রোস্ট একই সাথে সুস্বাদু, মশলাদার এবং সহজ একটি খাবার যা বাংলার ভিন্নধর্মী যত রান্না আছে তার মধ্যে অন্যতম। মাখনের মতো নরম ভাজা কচু, ঘন মসলার মধ্যে দুধ, টক দই, কাজু বাদাম এবং কাঠ বাদামের বাটা মিশিয়ে এই রান্নাটিকে করা হয় আরো বেশি মোলায়েম ও সুস্বাদু।
এছাড়া এলাচ, দারুচিনি, তেজপাতার ঘ্রাণ এবং বেরেস্তার মজাদার স্বাদের কম্বিনেশন তো আছেই। সবচেয়ে আকর্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে কচুর রোস্ট মুখে দিলেই যেন গলে যায়। এই খাবারটি একটি আদর্শ রান্নার আইটেম, যা মূলত নিরামিষ হলেও স্বাদে একেবারেই তা বুঝা যায় না।
যেকোনো উৎসব বা বিশেষ অনুষ্ঠানে অতিথিদের সামনে ব্যতিক্রমী কোনো খাবার পরিবেশন করতে চাইলে একদম পারফেক্ট এই কচুর রোস্ট।
কেন এটি খেতে ভালো লাগবেঃ
১. এই রান্নায় ব্যবহৃত মসলার কম্বিনবেশনের গভীর স্বাদ কচুকে নতুন মাত্রায় পৌঁছে দেয়।
২. বানানো সহজ অথচ দারুণ একটি বৈচিত্রময় খাবার, যা বিশেষ দিনে বা সাধারণ খাবারে ভিন্ন স্বাদ যোগ করে।
৩. রান্নার পর সুগন্ধ এবং বেরেস্তার যে সংমিশ্রণ, তা আপনার খাবারের প্রতি ভালোবাসা আরও বাড়িয়ে দেবে।
৪. মোলায়েম টেক্সচার, যা মনে রাখার মতো।
কি কি থাকা লাগবে রান্নাটা করতেঃ
১. তাজা কচু (সঠিকভাবে পরিষ্কার ও কাটা)
২. টক দই, আদা-রসুন বাটা
৩. লবঙ্গ, দারুচিনি, এলাচের মতো গরম মসলা
৪. সরিষার তেল বা সয়াবিন তেল
স্বাস্থ্য উপকারিতাঃ
- কচুতে রয়েছে আঁশ, যা হজমে সাহায্য করে।
- টক দই ও মসলার সংমিশ্রণ শরীরে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি প্রভাব ফেলে।
- গরম মসলা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- এছাড়া কচুতে থাকা প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ উপাদান আমাদের শরীরের বিভিন্ন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে পরিচালিত করতে সহায়তা করে।
পরিবেশনঃ
কচুর এই রোস্ট গরম ভাতের সাথে, লুচির সাথে বা পরোটা দিয়েও পরিবেশন করতে পারেন। একটু ধনিয়াপাতা কুচি ছড়িয়ে পরিবেশন করলে স্বাদ এবং সৌন্দর্য দুটোই বেড়ে যাবে।
তাহলে আর দেরি কেন? চলুন, তৈরি করি মজাদার ও পুষ্টিকর কচুর রোস্ট, যা আপনাদের পরিবারের পরবর্তী পছন্দের খাবার হতে চলেছে!

সুস্বাদু কচুর রোস্ট - পরিবারের পছন্দের খাবার
Delicious Home Makingমাখনের মতো নরম, ক্রিম টেক্সচার এবং অসাধারণ সুস্বাদু কচুর রোস্ট! মাত্র কয়েকটি সাধারণ উপকরণে ৩০ থেকে ৪০ মিনিটে তৈরি— পারফেক্ট ভাত বা লুচির সাথে উপভোগের জন্য!
Prep Time 10 minutes mins
Cook Time 30 minutes mins
Course Main Course
Cuisine Bengali
Servings 5 people
Ingredients
- ৫০০ গ্রাম কচু কেটে কাচিয়ে নেয়া
- ১/২ কাপ সয়াবিন তেল (পরিমাণ মতো) ভাজার জন্য
- ১ টেবিল চামচ লবণ (স্বাদ মতো) কচু মাখানো ও রান্না সহ
- ৩ টি এলাচ
- ২ টুকরা দারুচিনি
- ২ টি তেজপাতা
- ২ টি পেঁয়াজ কুচি মাঝারি আকারের
- ২ চা চামচ রসুন বাটা
- ২ চা চামচ পেঁয়াজ বাটা
- ১ চা চামচ জিরা গুঁড়া
- ১ চা চামচ ধনিয়া গুঁড়া
- ১/২ চা চামচ হলুদ গুঁড়া
- ১ চা চামচ মরিচ গুঁড়া স্বাদমতো
- ১/৪ কাপ টক দই
- ২ টেবিল চামচ কাজু ও কাঠবাদাম বাটা
- ১ কাপ তরল দুধ
- ১ কাপ পানি আবশ্যিক
- ৪-৫ টি কাঁচা মরিচ
- ১ চা চামচ চিনি
- ১/২ চা চামচ গরম মসলা গুঁড়ো
- ১ টেবিল চামচ ঘি
- পরিমাণ মতো বেরেস্তা পরিবেশনের জন্য
Instructions
- প্রথমে কচুর টুকরোগুলো ভালোভাবে কেটে- ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। এই সময়, ছুরির সাহায্যে কচুর গায়ে কিছুটা কোঁচ কেটে বা কাঁচিয়ে নিলে মসলার স্বাদ কচুর ভেতরে গভীরভাবে প্রবেশ করবে এবং রান্নার পর মসলার স্বাদ আরও ভালোভাবে কচুর ভেতরে প্রবেশ করবে।
- এরপর কচুর টুকরো গুলোতে লবণ মাখিয়ে কিছু সময় রেখে দিলে ভালো হয়। কচুতে লবণ মাখিয়ে রাখলে চুলকানি বা গলায় ধরার সম্ভাবনা কমে, কষ দূর হয় এবং কচু নরম হয়ে রান্নার উপযোগী হয়।
- কিছুক্ষণ পরে একটি পাত্রে সয়াবিন তেল দিয়ে দিন। তেলটা ভালোভাবে গরম হয়ে গেলে কচুর টুকরোগুলো একে একে পাত্রে দিয়ে দিন এবং সোনালী রঙ হওয়া পর্যন্ত ভালোমতো ভেজে নিন। ভাজা হয়ে গেলে কচুর টুকরোগুলো তুলে একটি আলাদা প্লেটে রেখে দিন, যেন অতিরিক্ত তেল ঝরে যায়।
- এবার ঐ তেলের সাথে সামান্য তেল যোগ করে তাতে এলাচ, দারুচিনি, তেজপাতা দিয়ে ফোড়ন দিন।
- এই ধাপে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে হালকা সোনালী রঙ আসা পর্যন্ত ভেজে নিতে হবে, এতে পেঁয়াজের স্বাদ পুরোপুরি বের হয়ে আসে। পেঁয়াজ সোনালী হয়ে গেলে তাতে রসুন বাটা, পেঁয়াজ বাটা, জিরা গুঁড়ো, ধনিয়া গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো এবং মরিচ গুঁড়ো একে একে দিয়ে ভালোভাবে মসলা কষিয়ে নিন। মসলাগুলো সম্পূর্ণ তেল ছাড়া না হয়ে, সুন্দরভাবে কষিয়ে গেলে এর স্বাদ আরও বাড়বে। যেহেতু পরবর্তীতে আরও কয়েকটি উপকরণ অ্যাড করা হবে।
- এরপর মসলাগুলোকে টক দই, কাজু বাদাম এবং কাঠ বাদামের বাটার সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন এবং সেগুলোকে একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে কষিয়ে নিতে থাকুন, যতক্ষণ না মসলার মধ্যে থাকা তেল পুরোপুরি আলাদা হয়ে যায় এবং মসলা স্বাদ গাঢ় ও সুগন্ধি হয়।
- এখন ভাজা কচুগুলো মসলার মধ্যে দিয়ে ভালোভাবে নেড়ে নিন, যাতে মসলাগুলো কচুর প্রতিটি টুকরোর সাথে মিশে যায় এবং একটি সুন্দর স্বাদ তৈরি হয়। তারপর এতে তরল দুধ যোগ করুন এবং প্রয়োজন মতো পানি মেশান। এরপর ঢাকনা দিয়ে ১৫-২০ মিনিট ধীরে ধীরে রান্না হতে দিন, যাতে কচু এবং মসলার সুগন্ধ একে অপরের মধ্যে মিশে যায় এবং তা খাবার উপযোগী স্বাদে পরিণত হয়।
- প্রায় ২০ মিনিট পর ঢাকনা খুলে, ভিতরে জমে থাকা মসলার সৌরভে মাতিয়ে কাঁচা মরিচ, মিষ্টি চিনি, গরম মসলা এবং এক চামচ মাখন বা ঘি যোগ করুন। সব উপকরণ একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে, কিছু সময় নেড়ে নেড়ে রান্নার স্বাদে যোগ করুন অনন্য মাত্রা।
- নামানোর আগে বেরেস্তা ছিটিয়ে পরিবেশন করুন, যা স্বাদ আরও বাড়িয়ে দেবে।
Notes
অতিরিক্ত টিপসঃ
১. কচু পরিষ্কার করার আগে হাতে একটু সরিষার তেল মাখিয়ে নিন, যাতে চুলকানি না হয়। ২. রান্নার শেষে ধনিয়াপাতা কুচি এবং লেবুর রস যোগ করলে পরিবেশনে এক্সট্রা ফ্লেভার আসবে। ৩. মশলার পরিমাণ আপনার স্বাদের উপর ভিত্তি করে সামঞ্জস্য করতে পারেন। যদি আরও মশলাদার ও ঝাল পছন্দ করেন, তবে কাঁচা মরিচ বা গরম মসলা বাড়িয়ে দিতে পারেন। ৪. বেরেস্তা (ভাজা পেঁয়াজ) আগেই তৈরি করে রাখুন। বেরেস্তা রোস্টের উপরে ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে খাওয়ার সময় স্বাদ বৃদ্ধি পায়। ৫. ভালো মানের ঘি ব্যবহার রোস্টের স্বাদ যেমন বাড়িয়ে দেয় তেমন সুগন্ধি করে তুলে এই রান্নাকে। তাই চেষ্টা করুন ঘি যেন আসল এবং ভালো মানের হয়। ৬. কচুর রোস্টকে পোলাও, পরোটা, লুচি বা ভাতের সাথে পরিবেশন করলে এটি আরও উপভোগ্য হয়। বিশেষ অনুষ্ঠানে অতিথিদের সামনে সাজিয়ে পরিবেশন করুন এই ভিন্ন স্বাদের খাবার। পরিশেষে,
কচুর রোস্ট শুধু স্বাদে নয়, পুষ্টিতেও সমৃদ্ধ। এই খাবারটি ভাত, লুচি বা পরোটা এমনকি পোলাও এর সাথেপ একেবারে অনন্য। সহজ কিছু উপকরণ আর সঠিক প্রক্রিয়ায় আপনি সহজেই এই রেসিপিটি তৈরি করতে পারবেন। ভিন্ন স্বাদের কিছু রান্না করে পরিবারের সবার মুখে হাসি ফোটাতে আজই কচুর রোস্ট তৈরি করে দেখুন!
১. কচু পরিষ্কার করার আগে হাতে একটু সরিষার তেল মাখিয়ে নিন, যাতে চুলকানি না হয়। ২. রান্নার শেষে ধনিয়াপাতা কুচি এবং লেবুর রস যোগ করলে পরিবেশনে এক্সট্রা ফ্লেভার আসবে। ৩. মশলার পরিমাণ আপনার স্বাদের উপর ভিত্তি করে সামঞ্জস্য করতে পারেন। যদি আরও মশলাদার ও ঝাল পছন্দ করেন, তবে কাঁচা মরিচ বা গরম মসলা বাড়িয়ে দিতে পারেন। ৪. বেরেস্তা (ভাজা পেঁয়াজ) আগেই তৈরি করে রাখুন। বেরেস্তা রোস্টের উপরে ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে খাওয়ার সময় স্বাদ বৃদ্ধি পায়। ৫. ভালো মানের ঘি ব্যবহার রোস্টের স্বাদ যেমন বাড়িয়ে দেয় তেমন সুগন্ধি করে তুলে এই রান্নাকে। তাই চেষ্টা করুন ঘি যেন আসল এবং ভালো মানের হয়। ৬. কচুর রোস্টকে পোলাও, পরোটা, লুচি বা ভাতের সাথে পরিবেশন করলে এটি আরও উপভোগ্য হয়। বিশেষ অনুষ্ঠানে অতিথিদের সামনে সাজিয়ে পরিবেশন করুন এই ভিন্ন স্বাদের খাবার। পরিশেষে,
কচুর রোস্ট শুধু স্বাদে নয়, পুষ্টিতেও সমৃদ্ধ। এই খাবারটি ভাত, লুচি বা পরোটা এমনকি পোলাও এর সাথেপ একেবারে অনন্য। সহজ কিছু উপকরণ আর সঠিক প্রক্রিয়ায় আপনি সহজেই এই রেসিপিটি তৈরি করতে পারবেন। ভিন্ন স্বাদের কিছু রান্না করে পরিবারের সবার মুখে হাসি ফোটাতে আজই কচুর রোস্ট তৈরি করে দেখুন!
Keyword Bengali cuisine, কচুর রোস্ট, বাঙালি রান্না, সহজ রেসিপি, কচু রান্নার পদ্ধতি, রোস্ট রেসিপি, রোস্ট রান্না, Taro root roast, Unique Bengali flavors, Bengali traditional recipe, Kochu roast recipe